নেপালে বন্ধ হচ্ছে ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

প্রযুক্তি ডেস্ক
নেপাল সরকার জানিয়েছে, ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সসহ বেশিরভাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করতে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন প্রক্রিয়া মানতে ব্যর্থ হওয়ায় এগুলোর অ্যাক্সেস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঘোষিত এ পদক্ষেপ সরকারের ভাষায় অনলাইনে ঘৃণামূলক বক্তব্য, গুজব এবং সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টার অংশ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পৃ্থ্বী সুব্বা গুরুঙ বলেন, “আমরা তাদের নিবন্ধনের জন্য যথেষ্ট সময় দিয়েছি এবং বারবার অনুরোধ করেছি, কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করেছে। ফলে আমাদের নেপালে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হলো।”
তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন করতে এবং স্থানীয় যোগাযোগ ব্যক্তি, অভিযোগ নিষ্পত্তিকারী ও স্ব-নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধির তথ্য দিতে কোম্পানিগুলোকে বুধবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। অন্যথায় সেগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গজেন্দ্র কুমার ঠাকুর এএফপিকে জানিয়েছেন, অনিবন্ধিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষ্ক্রিয় করা হবে।
মেটা (যার মালিকানায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ), ইউটিউবের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট, এক্স, রেডিট ও লিংকডইনকে বুধবারের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য বলা হয়েছিল।
তবে এএফপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারও প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহারযোগ্য ছিল।
২০২৩ সালের এক নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় এ অনলাইন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো—যাদের নেপালে বিনোদন, সংবাদ ও ব্যবসার জন্য লাখো ব্যবহারকারী আছে—তাদের নিবন্ধন করতে হবে এবং স্থানীয় অফিস স্থাপন করতে হবে।
এর মধ্যে মাত্র পাঁচটি, যেমন: টিকটক ও ভাইবার, আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন করেছে। আরও দুটি প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াধীন।
ডিজিটাল রাইটস নেপালের সভাপতি ভোলা নাথ ধুঙ্গানা বলেছেন, হঠাৎ এ ধরনের বন্ধ সরকারে ‘নিয়ন্ত্রণমূলক’ মনোভাব দেখায়।
তিনি বলেন, “এটি সরাসরি জনগণের মৌলিক অধিকারকে আঘাত করে।”
তার মতে, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে রাখা ভুল নয়, কিন্তু তার আগে এর জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত কাঠামো তৈরি করতে হবে। হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া মানে নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়া।”
নেপাল অতীতেও জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর অ্যাক্সেস বন্ধ করেছে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে সরকার অনলাইন জালিয়াতি ও অর্থপাচারের বাড়বাড়ন্তের কারণ দেখিয়ে টেলিগ্রাম অ্যাপ বন্ধ করেছিল।