২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন

বিনা ডেস্ক
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। এটি বাস্তবায়নে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা আসবে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। বাকি ৮৬ হাজার কোটি টাকা বিদেশী উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে বলে প্রত্যাশা করছে সরকার। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল অনুষ্ঠিত বৈঠকে আগামী অর্থবছরের জন্য এ উন্নয়ন বাজেট অনুমোদন হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এবারের বাজেটের আকার ছোট হলেও বাস্তবায়নযোগ্য হবে। বিদেশী ঋণ পরিশোধে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে এমন কোনো নতুন প্রকল্প নেয়া হবে না। উন্নয়ন বাজেটেও দীর্ঘমেয়াদি ও মেগা প্রকল্প থাকবে না।’
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাসের এক মাস পরই গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। ঘোষিত ওই বাজেটে এডিপির আকার ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটে আগের অর্থবছরের তুলনায় এডিপির আকার ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে আনা হচ্ছে। এনইসি সভায় উপস্থাপিত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এডিপিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পরিবহন ও যোগাযোগ, কৃষি, গৃহায়নসহ প্রায় সব খাতেই বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এডিপির আওতায় নতুন প্রকল্প রাখা হয়েছে ১ হাজার ১৪৩টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ যাচ্ছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে, যা মোট বাজেটের ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। তবে মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এডিপির ১৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ মন্ত্রণালয়টির জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরের মধ্যে ১৫ খাতের ২৫৮টি প্রকল্প শেষ হবে বলে এনইসির সভায় জানানো হয়।
বিগত সরকারের নেয়া বিভিন্ন অযৌক্তিক বড় প্রকল্পের সমালোচনা করেন ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বিদেশী ঋণ পরিশোধে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে এমন কোনো প্রকল্প নতুন করে নেয়া হবে না। উন্নয়ন বাজেটে দীর্ঘমেয়াদি ও মেগা প্রকল্প থাকবে না। এমনকি উচ্চ সুদের ঋণ থাকবে এমন প্রকল্পও আমরা নেব না। তবে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ ও সমুদ্রবন্দর প্রকল্পটি চলমান থাকবে। এটি আগে থেকে চলমান প্রকল্প এবং এখানে জাপান স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে। নতুন মেগা প্রকল্প নেয়া না হলেও চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে।’
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এডিপিতে যেসব প্রকল্প এখন আছে, সেগুলো চলমান প্রকল্প। বিগত সরকারের আমলে করা প্রকল্পের অনেকগুলো সুপরিকল্পিত নয়। এ কারণে অনেক প্রকল্প ধুঁকছে। বিগত সরকার অনেক মেগা প্রকল্প নিয়েছে, যেগুলো অবাস্তব।