‘তথ্য আপা’ প্রকল্প: বরাদ্দ বেড়ে ৬৬১ কোটি টাকা

বিনা ডেস্ক
গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে নেয়া ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাশাপাশি বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৫৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়। ওইদিন মোট ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পায়।
নারীদের স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা, লিঙ্গভিত্তিক সচেতনতা, আইনগত সহায়তা এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সহায়তা দিতে ২০১৭ সালে ‘তথ্য আপা: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ নামে প্রকল্পটি শুরু হয়। প্রাথমিক বাজেট ছিল ৫৪৪.৯০ কোটি টাকা।
প্রথম ধাপে ২০২২ সালের মার্চে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। পরে একাধিক সংশোধনীর মাধ্যমে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয় এবং বরাদ্দও বাড়ে। সবশেষ সংশোধনীসহ প্রকল্পের মোট বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ৬৬১ কোটি ৮ লাখ টাকায়। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের আগস্টে প্রকল্পটি অনিশ্চয়তায় পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্প কর্মীদের বেতন এবং দেওয়া হয় চাকরি ছাড়ার নোটিশ। একপর্যায়ে বেতনের একটি অংশও কেটে নেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে প্রকল্প কর্মীরা রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তি ও পাওনা পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। প্রেস ক্লাব ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে মানববন্ধন, অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর আশ্বাস দিলে আন্দোলন থেকে সরে আসেন কর্মীরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই একনেকে তৃতীয় সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় মহিলা সংস্থার অধীনে পরিচালিত এই প্রকল্পের পরিচালক ও যুগ্ম সচিব শাহনাজ বেগম নীনা বণিক বার্তাকে বলেন, “আমরা প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়াতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আন্দোলনের ধরন ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততায় উপদেষ্টারা অসন্তুষ্ট হয়েছেন। ফলে এক বছরের বেশি বাড়ানো হয়নি।”
তিনি আরও জানান, প্রকল্পকে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা সহজ নয়, এটা অনেক কর্মী বুঝতে পারেননি। কোনো প্রকল্প অনির্দিষ্টকাল চলতে পারে না। উপদেষ্টা পরিষদ জানিয়েছে, এবার মেয়াদ শেষ হলে আর বাড়ানো হবে না।”
আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মীরা পুনরায় নিয়োগ পাবেন কি না এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। তবে বলেন, “সুষ্ঠু প্রকল্প ব্যবস্থাপনার জন্য গাইডলাইন, মনিটরিং ও দায়িত্বশীলতা দরকার। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করব।
এদিনের একনেক সভায় আরও ১২টি প্রকল্পসহ মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, যার মোট ব্যয় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা।