ময়মনসিংহে পানি হ্রাস, কেটে গেছে বন্যার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক। বিনা
ময়মনসিংহে নদ-নদীর পানি ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের তীব্রতাও নেই বললেই চলে। ফলে বর্তমানে বন্যার আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রগুলো। এতে স্বস্তি ফিরে এসেছে নিম্নাঞ্চলের জনজীবনে।
গত মঙ্গলবার (২৭ মে) সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র, কংস ও নেতাই নদীর পানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পানি বাড়লেও বর্তমানে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। ধোবাউড়ার নেতাই নদীর একাংশে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তবে তা আর ঘটেনি। ফলে সম্ভাব্য প্লাবনের আতঙ্ক কেটে গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকার কারণে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলাগুলো অতীতে বন্যার কবলে পড়েছিল। গত বছরের ৪ অক্টোবরের বন্যায় প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন।
চলতি মাসের ১৭ মে থেকে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। ২১ মে পর্যন্ত পানি বাড়ার ফলে নেতাই নদীর কিছু অংশে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে এরপর থেকে টানা পানি হ্রাস পেতে থাকে।
ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াকান্দুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল জানান, “এ অঞ্চলে পাহাড়ি ঢলেই সাধারণত বন্যা হয়। তবে এখন বৃষ্টি ও ঢল নেই, নদীর পানি কমেছে, আর আতঙ্কও নেই।”
হালুয়াঘাটের শাকুয়াই গ্রামের কৃষক আসাদ মিয়া বলেন, “পানি বাড়ার সময় ধান কেটে ঘরে তুলেছি। এখন পানি অনেকটাই কমে গেছে। মনে হচ্ছে, এবছর আর বন্যা হবে না।”
ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু জানান, “বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষকরা ধান ঘরে তোলার কাজ করছেন। বন্যার সম্ভাবনা খুবই কম।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিল বলেন, “নদ-নদী, খাল-বিলে এখন অতিরিক্ত পানি নেই। পানি কমার ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি মৌসুমে বন্যার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।”
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা যায়, বর্তমানে ময়মনসিংহ অঞ্চলে বন্যার কোনো তাৎক্ষণিক ঝুঁকি নেই। তবে স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত আছে।