অবৈধভাবে বালু উত্তোলন মহামারির মতো ছড়িয়ে আছে

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন মহামারির মতো ছড়িয়ে আছে

বিনা প্রতিনিধি

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন গোটা বাংলাদেশে মহামারির মতো ছড়িয়ে আছে। আমরা একটা শক্ত অবস্থানে গিয়েছি। আমরা নিয়মিত ডিসিদের মনিটর করছি বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আজ সোমবার (১৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় পদ্মা নদীর ধারে বড়াল নদীর উৎসমুখ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, আমাদের দেশে বালু দস্যুতা এবং মাটি দস্যুতা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ইটভাটার জন্য, নির্মাণকাজের জন্য বালু তোলে। আর পাহাড় কেটে, কৃষি জমির উপরীভাগ কেটে নিয়ে চলে যায়। কৃষক রাতে ঘুমিয়ে পড়ে, সকালে উঠে দেখে তার জমির মাটি নাই। এই রকম ভয়ংকর অবস্থায় আমরা চলে গেছি। এই রকম ভয়ংকর অনিয়ম অনেক দিন থেকে হচ্ছে। এখন একদম চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা সেদিন তিন উপদেষ্টা- স্বরাষ্ট উপদেষ্টা, ভূমি উপদেষ্টা একসাথে ৬৪ জেলার ডিসি, এসপির সাথে বসেছিলাম শুধুমাত্র বালু উত্তোলনটাকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নির্দেশনা দিতে। সেখানে আমরা ১০ দফা নির্দেশনা স্পষ্ট করে দিয়েছি। বালুমহাল আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী সার্ভে করে দেখা বালু আছে কিনা। দেখা গেছে সেই সার্ভে ১০ বছর আগের। ১০ বছর পরে আর সেখানে বালু নাই। তাও ওই একই জায়গায় ইজারা দেওয়া হচ্ছে। আর যে ইজারা পাচ্ছে সে পাশের জায়গা থেকে বালু তুলছে। আমরা বলছি নতুন করে এই সার্ভেগুলো করতে হবে। তাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে। তাদের একটা যুক্তি হচ্ছে- আমরা দিনের বেলায় অভিযান পরিচালনা করি। তারা রাতের বেলায় বালু তোলে। এ বছর যে বালুমহালগুলো ইজারা দেওয়া হয়েছে সরকার আড়াইশো কোটি টাকাও পায় নাই।    

রিজওয়ানা হাসান বলেন, স্লুইচগেটগুলো তো কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে লাগায়নি। লাগিয়ে ছিল এজন্য যে যাতে বন্য নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু এখনকার বাস্তবতাটা ভিন্ন হয়ে গেছে। আমার আগে নদী বাঁচবে, তারপরে আমি অন্যন্য কথা বলব। এখন আমি যেটা বুঝেছি যে- পানি উন্নয়ন বোর্ডের থেকে একটা সম্পন্ন কর্ম পরিকল্পনা চাইব। এই চারঘাটের স্লুইচগেটটা সরিয়ে কতটুকু জায়গা আমার খনন করতে হবে। আর নিচের দিকে আটঘড়িয়ার ওই দিন থেকে আমার ১৮ কিলোমমিটার যেটুকু ভরাট হয়ে গেছে। ওইটুকু খননের সহজ উপাই কী। যদি আমাকে বলা হয়- জমি অধিগ্রহণ করে খনন। আমি ওইটাতে নিরুৎসাহিত করি। কারণ আমি দেখেছি সরকারিভাবে জমি অধিগ্রহণ শেষ হওয়াটা খুবই জটিল। প্রাকৃতিক উপায়ে আমরা কতটুকু ফেরত আনতে পারি সেটার জন্য কী পরিকল্পনা হতে পারে, সেটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে চাইব। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আমার পক্ষ থেকে যেটা ম্যাসেজ- সেটা হচ্ছে নদীটাকে একটা প্রাণ ব্যবস্থা, প্রকৃতিক সিস্টেম হিসেবে দেখে পরিকল্পনা করতে হবে।