কথায় কথায় মুড সুইং, সারাদিন ক্লান্তি? ঘুমের ঘাটতি হচ্ছে না তো?
ঘুম হলো একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। নিদ্রার সময় শরীর আপনার অজান্তেই একাধিক জরুরি কাজ করে। যার জন্য পরের দিন উঠে ফ্রেশ লাগে। কেটে যায় সব ক্লান্তি।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, আমাদের প্রতিটি মানুষের দিনে অন্ততপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুম দরকার। আর সেই ঘুমটা যেমন তেমন নয়, বরং ঠিক ঠাক হতে হবে। তা হলেই শরীর থাকবে সুস্থ-সবল। এমনকী মনও ভালো থাকবে।
তবে মুশকিল হলো, অনেকেরই পর্যাপ্ত সময় ঘুম হয় না। আবার অনেকের পর্যাপ্ত সময় ঘুম হলেও তা ঠিক ঠাক হয় না। যেই কারণে তাঁদের শরীর ও মনের উপর বড়সড় প্রভাব পড়ে। কিন্তু নিজেদের অজ্ঞানতার জন্য তাঁরা বিষয়টা বুঝতে পারেন না। তাই পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যাওয়ার আগে সাবধান হতে হবে। সেক্ষেত্রে এই নিবন্ধে উল্লেখিত কয়েকটি লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
1. ক্লান্তি
ঠিক ঠাক ঘুম না হওয়ার সবার প্রথম লক্ষণ হলো ক্লান্তি। এ ক্ষেত্রে ঘুম থেকে ওঠার পরও ক্লান্ত লাগে। কাজে মন লাগতে চায় না। সব কিছুতে ভুল হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এমনকী হাতে-পায়ে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কাও প্রবল হয়। তাই এই ধরনের কোনও লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ঠিক ঠাক ঘুম হচ্ছে কি না, তা বোঝার চেষ্টা করুন। না হলে পর্যাপ্ত সময় ঘুমানোর চেষ্টা করুন। অন্যথায় সমস্যা বাড়তেই থাকবে। আপনি কাজের থেকে দূরে চলে যাবেন।
2. হুহু করে বাড়তে পারে ওজন
ওজন বেশি থাকাটা কোনও কাজের কথা নয়। তবে অনেক সময় ঠিক ঠাক ঘুম না হলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো, ঘুমের সঙ্গে খিদের সম্পর্ক ঠিক কী? এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানালেন, ঘুম ঠিকঠাক না হলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। যার ফলে খিদে বেশি পেতে পারে। এমনকী শরীরে বেশি ফ্যাট জমতে পারে। যেই কারণে দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে ওজন। তাই চেষ্টা করুন পর্যাপ্ত সময় ঘুমিয়ে ওজন কমিয়ে ফেলার। তাতেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
3. বেরোতে পারে ব্রণ
জানলে অবাক হয়ে যাবেন, আপনার ঘুম ঠিক হওয়া বা না হওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ব্রণর সম্পর্ক। আসলে ঘুম ঠিক ঠাক না হলে শরীরে হরমোনের ব্যালেন্স বিগড়ে যায়। যে কারণে ব্রণ বেরোতে পারে। এমনকী অন্যান্য ত্বকের সমস্যাও হতে পারে। তাই হঠাৎ করে মুখে ব্রণ বেরোলে সাবধান হন। সে ক্ষেত্রে ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি ঘুমের দিকেও নজর দিন। ঠিক ঠাক ঘুমালেই অনায়াসে সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারবেন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
4. মুড সুইং হওয়ার আশঙ্কা
ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক একাধিক কাজ করে। অদরকারি স্মৃতি ‘রিসাইকেল বিন’-এ ফেলে দেয়। আর প্রয়োজনের তথ্য গচ্ছিত রাখে ব্রেনে। যার ফলে সকালে উঠে আমরা ঠিক ঠাক কাজ করতে পারি। আমাদের মন ভালো থাকে। তবে ঘুম যদি ঠিক না হয়, তা হলে কোনও মতেই মন ভালো থাকে না। তার হাল বিগড়ে যেতে পারে। তখন কথায় কথায় মন খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই চেষ্টা করুন যে ভাবেই হোক প্রতিদিন পর্যাপ্ত সময় ঘুমিয়ে পড়ার। তাতেই 'মেন্টাল পিস' পাবেন।
5. ভালো মতো ঘুমাতে মেনে চলবেন কোন কোন নিয়ম?
১. ঘুমাতে যাওয়ার ৩০ মিনিট আগে থেকে মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে নিন
২. এই সময় টিভিও দেখবেন না
৩. চেষ্টা করুন রাতে কফি বা চা না খাওয়ার
৪. রাতে বেশি তেল, মশলাদার খাবার খাবেন না
৫. ঘুম না এলে শুয়ে থাকবেন না, বদলে পায়চারি করুন।
আশা করছি, এই নিয়মটা মেনে চললেই আপনার ঠিক ঠাক ঘুম হবে।
Disclaimer: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
What's Your Reaction?